রোববার (১৮ অক্টোবর) আর্মেনিয়ার আরেকটি এসইউ-২৫ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে আজারবাইজান। বাকুর প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এ নিয়ে আর্মেনিয়ার দুটি এসইউ-২৫ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করলো আজারবাইজান।
এক বিবৃতিতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, আজারবাইজানের জাবরাইল এলাকায় হামলার চেষ্টাকালে এসইউ-২৫ যুদ্ধবিমানটি ভূপাতিত করা হয়। শনিবারও একই এলাকায় হামলার চেষ্টাকালে আর্মেনিয়ার আরেকটি এসইউ-২৫ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে আজারবাইজান।
স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটের দিকে আর্মেনিয়ার যুদ্ধবিমানটি ভূপাতিত করে আজারবাইজানের বাহিনী। বলা হয় বিবৃতিতে।
রোববার তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, আর্মেনিয়ার যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করায় টেলিফোনে আজারবাইজানকে অভিনন্দন জানিয়েছেন তুর্কি প্রতিরক্ষামন্ত্রী হুলুসি আকার।
এদিন, আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, কার্যকরের কয়েক এক ঘণ্টার মধ্যেই নতুন মানবিক যুদ্ধবিরতিও গুরতরভাবে লঙ্ঘন করেছে আর্মেনিয়া। ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আর্মেনিয়া আজারবাইজানে হামলা চালাচ্ছে বলেও জানায় বাকু।
২৭ অক্টোবর আজারবাইজানের বসতি এবং সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে আর্মেনিয়ার হামলার পর দু’পক্ষের মধ্যে সংঘাত বাধে। স্থানীয় সময় শনিবার মধ্যরাতে দ্বিতীয় যুদ্ধবিরতি কার্যকর।
১০ অক্টোবর বন্দিমুক্তি এবং সংঘাতে নিহতদের মরদেহ ফেরত দেয়ার শর্তে যুদ্ধিবিরতিতে একমত হয় বাকু এবং ইয়েরেভান। কার্যকরের কয়েক মিনিটের মধ্যে তা লঙ্ঘন করে আর্মেনিয়া। পরে দ্বিতীয় যুদ্ধবিরতিতে একমত হয় দু’পক্ষ। কার্যকরের এক ঘণ্টার মধ্যে আবারো তা লঙ্ঘন করে ইয়েরেভান। আজারবাইজানের গানজা শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে ১৩ জনকে হত্যা করে আর্মেনিয়া। আহত হয় অন্তত ৫০ জন।
আপার কারাবাখ সংঘাত
১৯৯১ সালে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত আজারবাইজানের ভূখণ্ড নার্গোনো-কারাবাখ দখল করে নেয়া আর্মেনিয়া। তারপর থেকে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত দেশ দুটির মধ্যে উত্তেজনা চলছে।
গেলো ৩০ বছর ধরে আজারবাইজানের ২০ শতাংশ ভূখণ্ড অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে আর্মেনিয়া। ১৯৯২ সালে সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য ফ্রান্স, রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের সমন্বয়ে ওএসসিই মিনস্ক গ্রুপ গঠন করা হয়। ১৯৯৪ সালে যুদ্ধবিরতির একটি চুক্তিতে একমত হয় আজারবাইজান-আর্মেনিয়া। কিন্তু সংকটের কোনো সমাধান হয়নি। জাতিসংঘের বেশ কয়েকটি প্রস্তাবনা এবং অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থা আজারবাইজানের ভূখণ্ড ছেড়ে দেয়ার জন্য আর্মেনিয়ার প্রতি আহ্বান জানালেও তাতে সাড়া দেয়নি ইয়েরেভান। আজারবাইজানের আত্মরক্ষা এবং নার্গোনো কারাবাখ থেকে আর্মেনিয়ার উচ্ছেদ দাবি করে বাকুকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে তুরস্ক। রাশিয়া, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বশক্তিগুলো যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে।