নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলায় গৃহবধূ লিপি আক্তারকে (৩৫) গলা কেটে হত্যার ঘটনায় দেবর রাসেল মিয়ার (৩০) বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
লিপি আক্তারের বোন ফেদৌসি বেগম রোববার (৪ অক্টোবর) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পরদিন সোমবার রাতে পূর্বধলা থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) এ ঘটনায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পুলিশ হেফাজতে রয়েছে অভিযুক্ত রাসেল। এ ছাড়াও মামলায় সন্দেহজনক হিসেবে অজ্ঞাত আরও দুজন রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুনসী। তবে এখনো কথা বলতে না পারায় পুলিশ তার জবানবন্দি নিতে পারছে না বলেও জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পূর্বধলা উপজেলা সদরের পশ্চিমপাড়া এলাকার লিপি আক্তার ও তার স্বামী আজিজুল ইসলামের চাচাতো ভাই রাসেলকে গলা কাটা অবস্থায় উদ্ধার করে স্বজনরা। রোববার মধ্যরাতে লিপির নিজ ঘর থেকে তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে গেলে চিকিৎসক গৃহবধূ লিপিকে মৃত ঘোষণা করেন। সঙ্গে উদ্ধারকৃত রাসেলকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে পাঠায়।
লিপির স্বামী বিজিবি সদস্য আজিজুল ইসলাম চাকরির সুবাদে পঞ্চগড়ে অবস্থান করায় বাড়িতে স্ত্রী ও তার ১২ বছর বয়সের একমাত্র ছেলেকে পরিবারের সঙ্গে রেখেছিলেন। লিপির শ্বশুরবাড়ির স্বজনরা জানান, গত কয়েক দিন পূর্বে আজিজুল বাড়িতে এসে চাচাতো ভাই রাসেল ও স্ত্রীর মাঝে প্রেমের সম্পর্ক থাকায় পারিবারিকভাবে মীমাংসা করে যান। এরপর রাতে কিভাবে পাশের বাড়ির রাসেল লিপির ঘরে ঢুকেছে কেউ তা বলতে পারছেন না। তবে দরোজা ভাঙা বা কোনো ধরনের হইহুল্লোর ছিল না।
নিহতের ছেলে আলিফ জানায়, প্রতিদিনের মতো শনিবার রাতেও খাবার খেয়ে মায়ের সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়ে সে। ভোরে হঠাৎ গোঙরানো এবং চেঁচামেচির আওয়াজ পাওয়া যায়। পরে সে ওঠে দেখে মা মেঝেতে পড়ে আছে। মায়ের পায়ের কাছে উপুর হয়ে পড়ে আছেন পাশের বাড়ির কাকা রাসেল। মায়ের গলা এবং চাচা রাসেলের গলাও কাটা। পরে চিৎকার করলে বাড়ির অন্যরা বেরিয়ে এসে উদ্ধার করে তাদের হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে মাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
এদিকে এ ঘটনায় বোনের হত্যাকাণ্ডের সঠিক বিচার দাবি করে লিপির বড় বোন ফেরদৌসি বেগম জানান, একটা সম্পর্ক ছিল। সেটা আমরা মীমাংসা করেও দিয়েছি। পরে সুযোগ না পেয়ে রাসেল আমর বোনকে পরিকিল্পিতভাবেই হত্যা করেছে। আমরা তার মৃত্যুদণ্ড দাবি করছি। এদিকে মামলা রের্কডের সঙ্গে সঙ্গে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত রাসেলকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে এবং পুলিশ পাহারায় তার চিকিৎসা চলছে।
পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুনসী আরও জানান, আমরা আসামিকে নজরদারিতে রেখেছি। সুস্থ হলেই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। কী করে সে ওখানে গেল বা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত কিনা অথবা আরও কেউ সঙ্গে ছিল কিনা সব কিছুই বেরিয়ে আসবে।