বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে টিকটকের কাছে দুটি অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছিল। এ অনুরোধে সাড়া দেয়নি টিকটক কর্তৃপক্ষ। তারা কোনো তথ্যও দেয়নি।
ইন্টারনেটে ভিডিও প্রচার বা প্রকাশের জনপ্রিয় অ্যাপ টিকটকের মালিক প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্স আজ মঙ্গলবার নিজ ওয়েবসাইটে তাদের ট্রান্সপারেন্সি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যায়, ইংরেজি অক্ষর ক্রম অনুযায়ী সাজানো তালিকায় চতুর্থ স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। মোট ৪২টি দেশ টিকটকের কাছে তথ্য চেয়ে অনুরোধ করেছে বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
ওই তালিকায় এ বছরের প্রথম ছয় মাস অর্থাৎ, ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত সময় বিবেচনা করা হয়েছে। ওই সময়ে বিশ্বে ১০ কোটি ৪৫ লাখ ৪৩ হাজার ৭১৯টি ভিডিও সরিয়ে ফেলে টিকটক। নীতিমালা লঙ্ঘন ও কমিউনিটি নীতিমালা না মানায় এসব ভিডিও সরিয়ে ফেলা হয়। প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ সংখ্যা টিকটকে বছরের প্রথম ছয় মাসে আপলোড হওয়া ভিডিওর এক শতাংশেরও কম।
টিকটক জানিয়েছে, তারা সবচেয়ে বেশি ভিডিও সরিয়েছে ভারতীয়দের। বছরের প্রথমার্ধে তিন কোটি ৭০ লাখের বেশি ভিডিও সরিয়েছে তারা। গত জুন মাসে ভারত সরকার টিকটকসহ ৫৮টি চীনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করে। অ্যাপল অ্যাপ স্টোর ও গুগল প্লে স্টোর ভারতে অ্যাপ দুটি সরিয়ে দেয় এবং টেলিকম প্রতিষ্ঠানগুলো ওই প্ল্যাটফর্মে ঢোকা বন্ধ করে দেয়।
টিকটক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা ভারতে যেসব ভিডিও সরিয়েছে তার ৯৬.৪৬ শতাংশ ভিডিও কোনো অভিযোগ পাওয়ার আগেই সরানো হয়। এর মধ্যে ৯০.৩২ শতাংশ ভিডিও কেউ দেখেনি।
টিকটক আরও জানিয়েছে, টিকটক ব্যবহারকারী বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের কাছে বিভিন্ন সরকারের পক্ষ থেকে আইনি অনুরোধ পাওয়ার হার বেড়ে গেছে। এর মধ্যে ৪২টি দেশ বা মার্কেট থেকে ব্যবহারকারীর তথ্য চেয়ে এক হাজার ৭৬৮টি অনুরোধ করা হয়। এর মধ্যে ১২১টি অনুরোধ সরকারি সংস্থার পক্ষ থেকে ১৫টি ভিন্ন দেশের কনটেন্ট সরিয়ে ফেলার বা আটকে দেওয়ার অনুরোধ করা হয়। তবে টিকটকের পক্ষ থেকে অঞ্চলভিত্তিক সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। টিকটকের পক্ষ থেকে ১০ হাজার ৬২৫টি কপিরাইট করা কনটেন্ট সরানোর অনুরোধ পর্যালোচনা করেছে। কনটেন্ট সরানোর দিক থেকে ভারতের পরই রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, পাকিস্তান, ব্রাজিল ও যুক্তরাজ্য।
টিকটক তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা এবং অধিকারকে সম্মান জানিয়ে বৈধ আইন প্রয়োগের অনুরোধগুলো বিবেচনা করে তারা। ব্যবহারকারীর তথ্য পেতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে তথ্যের ধরনের জন্য প্রয়োজনীয় উপযুক্ত আইনি নথি সরবরাহ করতে হয়। এর মধ্যে আদালতের আদেশ, ওয়ারেন্ট বা জরুরী অনুরোধ অন্তর্ভুক্ত। তবে সীমিত জরুরি পরিস্থিতিতে টিকটক আইনি প্রক্রিয়া ছাড়াই ব্যবহারকারীর তথ্য প্রকাশ করে থাকে।
রাজধানীর বনানীতে নতুন আইটি রিটেইল শপ চালু করলো আইটি রিটেইল চেইন প্রতিষ্ঠান এরনা লিমিটেড। সোমবার এরনা লিমিটেড-এর নতুন শোরুম উদ্বোধন করেন প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম।
শোরুম উদ্বোধন কালে তিনি বলেন, ‘বনানীর কামাল আতাতুর্ক এলাকাটি রাজধানীর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। তাই এখানকার আইটি ইউজাররা যেন নিশ্চিন্ত মনে এক ছাদের নিচে বিশ্বসেরা এবং গুণগত মানসম্পন্ন সকল ব্র্যান্ডের আইটি পণ্য কিনতে পারেন, সেজন্যই এই শাখাটি চালু করা হলো।’
প্রসঙ্গত, বনানী শাখাটি এরনা লিমিটেডের ৫ম শোরুম। শোরুমটি বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউতে সফুরা টাওয়ারের গ্রাউন্ড ফ্লোরে অবস্থিত। বনানী ছাড়াও রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্ক, জহির স্মার্ট টাওয়ার, মাল্টিপ্লান সেন্টার এবং পুলিশ প্লাজাতে এরনার শোরুম রয়েছে।
মাদক বিক্রির নতুন বাজারে পরিণত হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তির গোপন জগৎ ‘ডার্কওয়েব’। মাদক কেনাবেচা থেকে শুরু করে মাদকের সর্বশেষ বাজার দর সবকিছুই পাওয়া যাচ্ছে ডার্কওয়েবে। শুধু তাই নয়, মাদকের ক্রেতারা অনলাইন অর্ডার দেওয়ার পর হোম ডেলিভারির মাধ্যমে ক্রেতার ঘরেই পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে মাদকের চালান। বাংলাদেশ প্রতিদিনের অনুসন্ধানে এমন ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে। সিএমপির কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার পলাশকান্তি নাথ বলেন, ‘ডার্কওয়েবে মাদক বিকিকিনির তথ্য আমাদের কাছে রয়েছে। এ চক্রের সদস্যদের গ্রেফতারের প্রচেষ্টা চলছে। আশা করছি দ্রুতই এ চক্রের সদস্যদের গ্রেফতারের আওতায় আনতে পারব।’ চট্টগ্রাম মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক এমদাদুল ইসলাম মিঠুন বলেন, ‘ডার্কওয়েব ব্যবহার করে কয়েকটি চক্র মাদক বিকিকিনি করছে। মূলত তারা ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী ইয়াবা, গাঁজা এবং ফেনসিডিল সরবরাহ করে থাকে। এ চক্রের সদস্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’ অনুসন্ধানে জানা যায়, মাদক বিক্রির নতুন ক্ষেত্র হিসেবে মাদক পাচার চক্রের সদস্যরা বেছে নিয়েছে তথ্যপ্রযুক্তির অন্ধকার জগৎ ডার্কওয়েবকে। চট্টগ্রাম নগরী ও জেলার বেশ কয়েকটি চক্র ডার্কওয়েবে মাদক বেচাবিক্রি করছে। তারা কয়েক মাস ধরে ডার্কওয়েব সাইট ব্যবহার করে মাদক বেচাবিক্রি করে আসছে। এ ছাড়া মাদক বিক্রি চক্রগুলোর ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপভিত্তিক বিভিন্ন গ্রুপও রয়েছে তাদের। ওই গ্রুপগুলোর মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগও রক্ষা করে। এসব গ্রুপে প্রবেশ করতে পারে শুধু তাদের নির্ধারিত ক্রেতারা। প্রবেশের পর ইয়াবা, গাঁজা ও ফেনসিডিল অর্ডার করতে পারে। যাচাই করতে পারে মাদকের বাজার ধর। মাদকের বেচাবিক্রির টাকা দেনদেনও হয় ডিজিটাল পদ্ধতিতে।
মোবাইল ব্যাংকিং ও ডেবিট-ক্রেডিট কার্ড দিয়ে পরিশোধ করা হয় মাদকের দাম। ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী হোম ডেলিভারিতেও মাদক সরবরাহ করে অনলাইনভিত্তিক মাদক বিক্রির পাচার চক্রের সদস্যরা। এক্ষেত্রে অতিরিক্ত ডেলিভারি চার্জ দিতে হয়। হোম ডেলিভারির পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জায়গায়ও তারা কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ইয়াবা সরবরাহ করে থাকে। এক্ষেত্রে অনলাইনভিত্তিক কিছু বেনামি ওষুধ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের নামে স্টিকার ও মোড়ক ব্যবহার করে থাকে।
চট্টগ্রাম মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক এমদাদুল ইসলাম মিঠুন বলেন, ‘যে কেউ চাইলে ডার্কওয়েবে প্রবেশ করতে পারবে না। ডার্কসাইটে প্রবেশের আগে বিস্তারিত তথ্য জানাতে হবে। এটাও নিশ্চিত করতে হবে প্রবেশকারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নন। সবকিছু নিশ্চিত হওয়ার পরই ডার্কওয়েব সাইটে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া কয়েক সিক্রেট ফেসবুক গ্রুপ ও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ রয়েছে অনলাইনভিত্তিক মাদক ব্যবসায়ীদের। এসব গ্রুপের সদস্য করা হয় শুধু তাদের নির্দিষ্ট গ্রাহকদের।