কোভ্যাক্সিন কাজ করছে প্রাণীদের শরীরে, ট্রায়াল শেষে দাবি ভারত বায়োটেকের

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • প্রকাশিত : শনিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২০
  • ৩৭১ প্রিয় পাঠক,সংবাদটি ভাল লাগলে শেয়ার করুন এবং মধুমতির সাথেই থাকুন

অক্সফোর্ডের সম্ভাব্য করোনা টিকা নিয়ে উদ্বেগের মাঝেই সুখবর শোনাল ভারত বায়োটেক। সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি করোনার টিকা কোভ্যাক্সিন প্রাণীদের শরীরে দুর্দান্ত কাজ করছে। শুক্রবার এই ভ্যাকসিনটির অ্যানিমাল ট্রায়ালের ফলপ্রকাশ করে এমনটাই দাবি করেছে প্রস্তুতকারী সংস্থাটি।
নিয়ম অনুযায়ী হিউম্যান ট্রায়ালের পাশাপাশি প্রাণীদের শরীরেও এই ভ্যাকসিনের ডোজ প্রয়োগ করেছিল ভারত বায়োটেক। মোট ২০টি রেসাস প্রজাতির বাঁদরকে ৪ ভাগে ভাগ করে এই টিকার একাধিক ডোজ দেওয়া হয়েছিল। একটি দলকে প্ল্যাসেবো সাপোর্টে রাখা হয়, অন্য তিনটি দলকে তিনটি ভিন্ন ডোজে শূন্য থেকে ১৪ দিনের ব্যবধানে টিকা দেওয়া হয়। টিকার ডোজ দেওয়ার তিন সপ্তাহের মধ্যে ইমিউনোগ্লোবিউলিন অ্যান্ডিবডি তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায় বাঁদরদের শরীরে। ভারত বায়োটেকের দাবি, তাঁদের সেই ট্রায়াল সফল হয়েছে। ট্রায়ালের রিপোর্টে বলা হয়েছে, বাঁদরদের শরীরে ভাইরাল স্ট্রেন ঢুকিয়ে সংক্রমিত করে টিকার প্রয়োগের ফলাফল লক্ষ্য করা হয়। টিকার ডোজ দেওয়ার পরে নির্দিষ্ট দিনের ব্যবধানে তাদের নাক, মুখ, গলা ও লিভার থেকে নেওয়া নমুনা পরীক্ষা করে ভাইরাল স্ট্রেনের কোনও চিহ্ন মেলেনি। কাজেই টিকা শরীরে ঢুকে ভাইরাস প্রতিরোধী সুরক্ষা বলয় তৈরি করেছে এটা নিশ্চিত। আরও একটা ইতিবাচক দিক হল টিকার ডোজে কোনওরকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি বাঁদরদের শরীরে। শ্বাসযন্ত্রের কোনও রোগ বা নিউমোনিয়া ধরা পড়েনি কারও মধ্যেই। এটা ট্রায়ালের সবচেয়ে ভাল দিক বলেই জানিয়েছে ভারত বায়োটেক। এবং, টিকা নেওয়ার তিন সপ্তাহের মধ্যেই এই প্রাণীগুলির শরীরে করোনার বিরুদ্ধে ইমিউনোগ্লোবিউলিন অ্যান্টিবডি তৈরির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। শুক্রবার সংস্থার তরফে টুইট করে জানানো হয়েছে, ‘‌ভারত বায়োটেক গর্বের সঙ্গে ঘোষণা করছে যে, কোভ্যাক্সিনের প্রাণী শরীরে পরীক্ষা সফল হয়েছে। দেখা গেছে, এই টিকার প্রভাব প্রাণীদের শরীরেও বেশ সক্রিয় এবং ইতিবাচক। এর প্রভাবে তৈরি হচ্ছে অ্যান্টিবডিও।’‌ ভারত বায়োটেকের দাবি, অ্যান্টিজেন তৈরিতে সাফল্যের পাশাপাশি এর কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও দেখা যায়নি।
কোনও ভ্যাকসিন প্রি–ক্লিনিকাল ট্রায়াল অতিক্রম করলেই ক্লিনিকাল ট্রায়ালে যেতে পারে। প্রি–ক্লিনিকাল ট্রায়ালের অর্থ, বিভিন্ন প্রাণীর শরীরে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা। ‘কোভ্যাক্সিন’ সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পেরেছে। এখন চলছে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল। এই ট্রায়ালের প্রক্রিয়া বেশ দীর্ঘ। ভাইরোলজিস্টদের মতে, বয়স, বর্ণ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নির্বিশেষে বহু মানুষের উপর এই প্রতিষেধক প্রয়োগ করে পরীক্ষা করা হয়। মোট তিন ধাপে এই ট্রায়াল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। যার প্রথম পর্যায়ের প্রথম পর্বের ফলাফল কোটি কোটি ভারতবাসীর মনে আশার সঞ্চার করেছে। সূত্রের খবর, দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এই টিকাটি এই মুহূর্তে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের দ্বিতীয় পর্যায়ে আছে।

Please Share This Post in Your Social Media

মধুমতি টেলিভিশনের অন্যান্য খবর